বাংলাদেশের একজন তরুণ আলোকচিত্রীর হাত ধরে আবারো এলো বিরল সম্মান। ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে শুরু হয়েছে আলোকচিত্রী আসাফ উদ দৌলার একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী। বাংলাদেশের প্রকৃতি, জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যবিষয়ক তার মোট ৪০টি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে ‘ইমোশন্স টু জেনারেট চেঞ্জ’ শিরোনামের এই প্রদশনীতে। প্রদর্শনীর উদ্যোক্তা ইতালির চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক লিয়া বেলত্রামি।
৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। এমন এক সময়ে প্রদর্শনীটির আয়োজন করা হলো—যখন স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-২৬’। পোপ ফ্রান্সিস প্রতিষ্ঠিত ‘ডিকাস্টারি ফর প্রোমোটিং ইন্টিগ্রাল হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট’-এর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, গ্লাসগো সম্মেলনে যেন ঈশ্বরের সৃষ্টি রক্ষার বিষয়টি প্রাধান্য পায় সেকারণেই একই সময় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হলো।
‘ডিকাস্টারি ফর প্রোমোটিং ইন্টিগ্রাল হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট’-এর প্রিফেক্ট পিটার কে. এ. টার্কসন জানিয়েছেন, ‘শিল্পকলা পৃথিবীকে ভিন্নভাবে আমাদের সামনে হাজির করে। প্রকৃতি যে ভালোবাসায় পূর্ণ শুধু তাই দেখাননি বাংলাদেশের তরুণ মুসলিম আলোকচিত্রী আসাফ উদ দৌলা ও ক্যাথলিক লিয়া বেলত্রামি—এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা আমাদের ইকোসিস্টেমের উচ্চ শিল্পমান নিয়েও আলোচনা করতে পারছি।’
বেলত্রামি বলেছেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শিল্পকলা মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আনতে সক্ষম।…ছবির মধ্য দিয়ে, জীবনের মধ্য দিয়ে আমরা অবিচ্ছেদ্য পরিবেশের পক্ষ নিতে পারি এবং সৃষ্টি ও মানুষকে রক্ষা করতে পারি।’
করোনা-পরিস্থিতির কারণে ভ্যাটিকান সিটি যেতে পারেননি আসাফ। তবে উচ্ছ্বসিত আসাফ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘এত মানুষ দেখে লিটারেলি আমার চোখে পানি চলে আসছে। একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি গর্বিত। বাংলাদেশের এই সামান্য একজন মানুষের ছবি দেখার জন্য এত মানুষের ভিড়। সবাই আমাকে খুঁজছে কিন্তু আমি সেখানে নেই।…সবাই বাংলাদেশের নাম জানছে এবং সে ছবিগুলি দেখে সারা বিশ্বের মানুষ বাংলাদেশকে নতুন করে চিনছে।’’
২০০৮ সাল থেকে ফটোগ্রাফি করছেন আসাফ উদ দৌলা। দেশের ভেতর এক ডজনেরও বেশি যৌথ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে তার ছবি। ইতালির ‘মিলান এক্সপো-২০১৫’ তেও তার ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। তার পড়াশোনা টেলিকমিউনিকেশন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। বর্তমানে বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমির আলোকচিত্রী হিসেবে কর্মরত আছেন।