আজ ১৩ অক্টোবর ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি প্লেব্যাক গায়ক কিশোর কুমারের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯৮৭ সালের ১৩ অক্টোবর ৫৮ বছর বয়সে মারা যান কিশোর কুমার। তার প্রকৃত নাম আভাস কুমার গাঙ্গুলি, ভারতের মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়ার এক মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে ১৯২৯ সালের ৪ আগস্ট তার জন্ম। আইনজীবী কুঞ্জলাল গঙ্গোপাধ্যায় এবং গৌরীদেবীর ছোট ছেলে কিশোর কুমার প্রথাগত তালিম ছাড়াই সঙ্গীত জগতে পদার্পণ করেন।
কিশোর কুমার ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার এবং রেকর্ড প্রযোজক। তিনি প্রথম প্লেব্যাক গান করেন ১৯৪৮ সালে বোম্বে টকিজের ‘জিদ্দি’ চলচ্চিত্রে। তবে, ‘মরণ কি দুয়ায়ে কিউ মাঙ্গু’ শিরোনামের গানটি তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। নানা ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছিলেন তিনি, যার মধ্যে রয়েছে বাংলা, হিন্দি, মারাঠি, অসমীয়া, গুজরাটি, কন্নড়, ভোজপুরি, মালয়ালাম, ওড়িয়া ও উর্দু। কিশোর কুমারের গাওয়া শ্রোতাপ্রিয় বাংলা গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘আজ এই দিনটাকে মনের খাতায় লিখে রাখো’, ‘আশা ছিল ভালোবাসা ছিল’, ‘আমার পূজার ফুল’, ‘তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে’, ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’, ‘কি আশায় বাঁধি খেলাঘর’, ‘কোথা আছো গুরুদেব’, ‘নয়ন সরশী কেন ভরেছে জলে’, ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’, ‘তোমায় পড়েছে মনে’, ‘সেদিনও আকাশে ছিল কত তারা’। আর হিন্দি গানের মধ্যে আছে ‘হামে তুমসে পেয়ার কিতনা’, ‘হামে অর জিনে কি’, ‘দেখা এক খাওয়াব’, ‘সাগার কিনারে’, ‘চেহরা হে ইয়া’, ‘ইয়ে দোস্তি’, ‘রিমঝিম ঘিরে সাওয়ান, ‘চিঙ্গারি কোই ভরকে’, ‘কোরা কাগজ থা ইয়ে মন মেরা’, ‘তুম আগয়ে হো’।
প্লেব্যাকের পাশাপাশি ১৯৫১ সালে ‘আন্দোলন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন কিশোর কুমার। এছাড়াও ‘দূর গগন কি ছাঁও মে’, ‘দূর কা রাহি’, ‘চালতি কা নাম গাড়ি’, ‘হাফ টিকিট’, ‘পারোসান’, ‘ঝুমরু’, ‘হাঙ্গামা’, ‘পেয়ার দিওয়ানা’ তার অভিনীত কয়েকটি চলচ্চিত্র।
ব্যক্তিগত জীবনে চারবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন কিশোর কুমার। প্রথম স্ত্রী রুমা গুহঠাকুরতা, দ্বিতীয় স্ত্রী মধুবালা, তৃতীয় স্ত্রী যোগিতা বালি এবং চতুর্থ স্ত্রী লীনা চন্দ্র ভরকার। তাদের মধ্যে রুমা ছিলেন কণ্ঠশিল্পী, আর বাকিরা অভিনেত্রী গায়িকা। কিশোর কুমার ও রুমার ঘরে ১৯৫২ সালে জন্ম হয় অমিত কুমারের। তিনিও একজন প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পী।