গুপী-বাঘার খেরোখাতা ওয়েবসাইটে

খেরোখাতায় সত্যজিতের করা স্কেচ

সিনেমা তৈরির আগে খেরোখাতায় সব তথ্য ও পরিকল্পনা লিপিবদ্ধ করে রাখতেন সত্যজিৎ রায়।বিভিন্ন নোট ও স্কেচের  মাধ্যমে সিনেমার খুঁটিনাটি তিনি খেরোখাতায় ধরে রাখতেন। সেই খোরাখাতা এবার সাধারণ মানুষের দেখর সুযোগ করে দেয়া হলো। ওয়েবসাইটে তুলে দেয়া হয়েছে সত্যজিতের খেরোখাতা। কিন্তু আপাতত ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমায় ব্যবহৃত দুটি খেরোখাতা।

www.exploreray.org ওয়েবসাইটে গেলেই দেখা যাবে সত্যজিৎ রায়ের দুটি খেরোখাতা। বইয়ের আকার দিয়ে খাতা দুটি আপলোড করা হয়েছে। প্রথম খাতায় রয়েছে সিনেমা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। ভূতের নাচের দৃশ্যের স্কেচগুলো মিলবে দ্বিতীয় খাতায়। প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠায় সত্যজিৎ ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমার নানা দিক বর্ণনা করেছেন। সম্পাদনা, নেপথ্য সংগীত, মঞ্চসজ্জা, পোশাক, সাউন্ড, স্পেশ্যাল ইফেক্ট ইত্যাদি প্রায় বিষয়েই তথ্য রয়েছে খাতাগুলোতে।

ভূতের নাচের দৃশ্য-পরিকল্পনা করতে সত্যজিৎ একটি আলাদা খাতা ব্যবহার করেছেন। ৯০ পৃষ্ঠাজুড়ে তিনি এই দৃশ্যের স্কেচ এঁকেছেন। দৃশ্যটি সত্যজিতের প্রিয় ছিল এবং ভীষণ গুরুত্ব দিয়ে দৃশ্যটি নির্মাণ করেছিলেন। নৃত্য পরিচালনার জন্য আনা হয়েছিল শম্ভু ভট্টাচার্যকে। আর এজন্যই এখনো সেই সাত মিনিটের দৃশ্য দর্শকের মনে গেঁথে আছে।

খেরোখাতায় সত্যজিতের করা স্কেচ

এক্সপ্লোর রে ওয়েবসাইট তৈরির পেছনে রয়েছে ‘সেন্টার ফর নিউ মিডিয়া’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আর নানাভাবে সাহায্য করছেন সত্যজিৎ রায়ের ছেলে চলচ্চিত্র নির্মাতা সন্দীপ রায়, মৃণাল সেনের ছেলে কুণাল সেন ও পূর্ণিমা দত্ত। ওয়েবসাইটে গিয়ে খেরোখাতা দেখা ছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় সিনেমার স্ক্রিপ্ট পড়া যাবে। শুধু সিনেমার জন্য নয়—সত্যজিতের আঁকা অনবদ্য সব স্কেচ ও অলংকরণ দেখতেই ঢুঁ মারা যায় এই ওয়েবসাইটে।

ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর গল্প অবলম্বনে এই সিনেমাটি করেছেন সত্যজিৎ। ১৯৬৯ সালে ছবিটি মুক্তি পায়। মুক্তির পর টানা ১০৩ সপ্তাহ হলে সিনেমাটি চলে। ভারতে দুটি জাতীয় পুরস্কারসহ বিদেশেও ছবিটি একাধিক পুরস্কার অর্জন করে। ১৯৮০ সালে এই সিনেমার দ্বিতীয় পর্ব—‘হীরক রাজার দেশে’ তৈরি করেন সত্যজিৎ। তৃতীয় পর্ব—‘গুপী বাঘা ফিরে এলো’ পরিচালন করেন সত্যজিতের ছেলে সন্দীপ রায়। তবে তিনটি পর্বের চিত্রনাট্যই সত্যজিৎ রায়ের করা। হলিউডের ‘দ্য একাডেমি ফিল্ম আর্কাইভ’ ২০০৩ সালে ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমাটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়।

এমন আরো সংবাদ

সর্বশেষ বিনোদন