বাংলাদেশের মঞ্চ ও টিভি নাটকের একটি পরিচিত নাম নায়লা আজাদ নূপুর। সত্তর ও আশির দশকে মঞ্চ ও টিভিতে তার বিশেষ প্রভাব ছিল। বেশকিছু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। তবে শুধু দেশের নাটক-সিনেমাতেই নয়, হলিউডেও তার পদচারণা রয়েছে। তিনিই এখন পর্যন্ত হলিউডে অভিনয় করা প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশি।
নায়লা আজাদ নূপুর ১৯৮৯ সালে স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টিয়াক ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যান। সেখান থেকে থিয়েটার বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ১৯৯৭ সালে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রেই স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন নূপুর। সেখানকার স্টেজ শোগুলোতে অভিনয় করা শুরু করেন। এসময়ে তিনি বেশকিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রে অভিনয় করেন।
১৯৯৮ সালে ‘স্টর্ম ইন দ্য আফটারনুন’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে হলিউডে অভিষেক হয় নায়লা আজাদ নূপুরের। ‘স্টর্ম ইন দ্য আফটারনুন’ সিনেমায় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংঘাত পরিবর্তনের চেষ্টায় ধরা পড়া চার ব্যক্তির গল্প তুলে ধরা হয়। এই সিনেমার চারটি কেন্দ্রীয় চরিত্রের একটিতে অভিনয় করেছেন নূপুর।
এরপর ২০০৯ সালে ‘ক্রসিং ওভার’ সিনেমায় অভিনয় করেন নায়লা আজাদ। ওয়েন ক্র্যামার পরিচালিত ‘ক্রসিং ওভার’ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন জনপ্রিয় হলিউড তারকা হ্যারিসন ফোর্ড। যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে এই সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। সিনেমায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের জীবনযুদ্ধ তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমাটিতে একটি বাংলাদেশি পরিবারের কাহিনীও দেখানো হয়। এই বাংলাদেশি পরিবারটির মা রোকেয়া জাহাঙ্গীর-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন নায়লা আজাদ নূপুর।
সিনেমাবিষয়ক ওয়েবসাই সিনেগল্প বলছে, নায়লা আজাদ নূপুর হলিউডের দুটি টিভি সিরিজেও অভিনয় করেছেন। এছাড়া ফক্স টিভির ‘লাই টু মি’ সিরিজে ছোট একটি চরিত্রে দেখা যায় তাকে। স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও বাংলাদেশে এসে তিনি বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে ‘ঘুড্ডি’ সিনেমায় অভিনয় করার মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে নায়লা আজাদ নূপুরের অভিষেক হয়। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘ঘুড্ডি’ (১৯৮০), ‘মোহনা’ (১৯৮৩), ‘দহন’ (১৯৮৫), ‘কিত্তনখোলা’ (২০০০), ‘ঘাসফুল’ (২০১৫), ‘বাঙালি বিউটি’ (২০১৮) ইত্যাদি।
নূপুর অভিনীত টিভি নাটকগুলোর মধ্যে ‘রত্নদ্বীপ’ (১৯৭৪), ‘নিশিত তৃষ্ণায়’ (১৯৮০), ‘আওরঙ্গজেব’ (১৯৮২), ‘আয়না’ (১৯৮২) ‘শেষ বংশধর’, ‘ভালোবাসি ঘাস’, ‘কোথায় যাব আমি কীসের বিচার চাইবো’, ‘ক্যাক্টাস’, ‘যাদুর শহর’ (২০১১), ইতি বৃত্তান্ত (২০১৫) উল্লেখযোগ্য।