সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের পর সম্ভবত বুকারই বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক সাহিত্য পুরস্কার। যুক্তরাজ্যের এই পুরস্কারের জন্য যেকোনো লেখক বই জমা দিতে পারেন। তবে শর্ত হলো—বইটি যুক্তরাজ্য থেকেই প্রকাশিত হতে হবে। যাহোক, এই বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও এ পুরস্কার পেতে চান বেশিরভাগ ইংরেজি ভাষার লেখক। অনেকের স্বপ্ন ওই বুকার পুরস্কার। এবছরও দেয়া হবে এই পুরস্কার। বুকার পুরস্কার কর্তৃপক্ষ শত শত বই থেকে বাছাই করা ১৩টি বই নিয়ে প্রকাশ করেছে ‘লংলিস্ট’ বা দীর্ঘ তালিকা। এখান থেকে করা হবে সংক্ষিপ্ত তালিকা। আপাতত এই কাঙ্ক্ষিত ‘দ্য বুকার প্রাইজ ফর ফিকশন’ পেতে লড়াই করছে ১৩ জন লেখকের ১৩টি বই।
২০১৭ সালে সাহিত্য নোবেল এবং ১৯৮৯ সালে ‘দ্য রিমেইন্স অব দ্য ডে’ উপন্যাসের জন্য একবার বুকার পুরস্কার পেয়েছেন ৬৬ বছর বয়সী জাপানি লেখক স্যার কাজুও ইশিগুরো। ২০২১ সালে বুকারের দীর্ঘ তালিকায়ও তিনি আছেন। তার অষ্টম গ্রন্থ ‘ক্লারা এন্ড দ্য সান’ জায়গা করে নিয়েছে সেই তালিকায়।
মার্কিন লেখক রিচার্ড পাওয়ার্সের ঝোলাভর্তি সাহিত্য পুরস্কার। ২০১৯ সালে পুলিৎজার পুরস্কার পান তার ‘দ্য ওভারস্টোরি’ উপন্যাসের জন্য। ২০০৬ সালে পুলিৎজারে ফাইনালিস্ট হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা বই পুরস্কার অর্জন করেন। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর ‘নোটেবল বুক’ হিসেবে নির্বাচিত হয় তার পাঁচটি বই। এবার বুকার পুরস্কারের দীর্ঘ তালিকায় আছে তার ‘বিউইল্ডারমেন্ট’। এর আগেও তার একাধিক বই বুকারের তালিকায় ছিল।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সঞ্জীব সাহোতার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘দ্য ইয়ার অব দ্য রানআওয়েজ’ ২০১৫ সালের বুকার পুরস্কারে সংক্ষিপ্ত তালিকায় চলে আসে। আর এবার তার ‘চায়না রুম’ বইটি চলে এসেছে দীর্ঘ তালিকায়।
ব্রিটিশ-কানাডীয় ঔপন্যাসিক র্যাচেল কাস্কের ‘সেকেন্ড প্লেস’ উপন্যাসটি এবারের তালিকায় রয়েছে। ২০০৫ সালে তার ‘ইন দ্য ফোল্ড’ বইয়ের নামও বুকারের দীর্ঘ তালিকায় উঠেছিল।
শ্রীলংকার অনুক অরুদপরগসম এই তালিকায় আছেন ‘এ প্যাসেজ নর্থ’ বইটির জন্য। তার প্রথম উপন্যাস বের হয় ২০১৬ সালে—‘দ্য স্টোরি অব এ ব্রিফ ম্যারেজ’। সেই উপন্যাসটি ইউরোপের বেশ কয়েকটি ভাষায় অনূদিত হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার ডেমন গ্যালগাট এর আগে দুবার বুকারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় এসেছিলেন—২০০৩ সালে ‘দ্য গুড ডক্টর’ এবং ২০১০ সালে ‘ইন এ স্ট্র্যাঞ্জ রুম’ বইয়ের জন্য। আর এবার লম্বা তালিকায় এসেছে তার ‘দ্য প্রমিজ’ বইটি।
কানাডীয় উপন্যাসিক ম্যারি লসনের ‘দ্য টাউন কল্ড সোলাস’ বইয়ের নাম এবার দীর্ঘ তালিকায় এসেছে। এর আগে তার ‘দ্য আদার সাইড অব দ্য ব্রিজ’ (২০০৬) বইটি বুকার পুরস্কারের দীর্ঘ তালিকায় স্থান পেয়েছিল।
এবারের দীর্ঘ তালিকায় আরো আছে মার্কিন লেখক নাথান হ্যারিসের ‘দ্য সুইটনেস অব ওয়াটার’, দক্ষিণ আফ্রিকার লেখক ক্যারেন জ্যানিংসের ‘অ্যান আইল্যান্ড’, মার্কিন ঔপন্যাসিক ও কবি প্যাট্রিকা লকউডের ‘নো ওয়ান ইজ টকিং অ্যাবাউট দিস’, সোমালি-ব্রিটিশ লেখক নাদিফা মোহামেদের ‘দ্য ফরচুনম্যান’, মার্কিন লেখক ম্যাগি শিপস্টিডের ‘গ্রেট সার্কেল’ এবং ব্রিটিশ লেখক ফ্রান্সিস স্পাফর্ডের ‘লাইট পার্পেচুয়াল’।
এবছরের বিচারক কমিটির প্রধান হয়েছেন ইতিহাসবিদ মায়া জেসনফ। বুকার বিজয়ী পাবেন ৫০ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৫৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা)। বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে এবছরের ৩ নভেম্বর।