গত বছরের অক্টোবর মাসে চিকিৎসা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছেন চিত্রনায়ক ফারুক। এরপর থেকে তিনি সুস্থই ছিলেন। চিকিৎসকেরা আগেই বলে দিয়েছিলেন, বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা থাকায় ফারুকের শরীর খারাপ হতে পারে। সে জন্য তিন মাস পরপর রুটিন চেকাপ করাতে হবে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি সেই নিয়মিত পরীক্ষা করাতে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে যেতে পারেন নি। অবশেষে এই অভিনেতা মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে স্ত্রী ফারহানা পাঠানকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান। ৮ এপ্রিল হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুনজন রটেছে এই অভিনেতা মারা গেছেন। এই খবরটি যেনে বিরক্ত প্রকাশ করেন অভিনেতার পরিবার পরিজন। পরবর্তীতে ফেসবুক লাইভে এসে বিস্তারিত আলোচনা করেন অভিনেতার স্ত্রী। তিনি জানান অভিনেতা মোটামুটি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। শারীরিকভাবে অচেতন অবস্থায় ছিলেন তবে এখন তিনি আস্তে আস্তে সাড়া দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা অভিনেতা।
১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত জলছবি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। তিনি লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে, মিয়া ভাই-সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।
উল্লেখ্য যে, ফারুক স্কুল জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি ছয় দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং এ সময়ে তার নামে প্রায় ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
ফারুক ফারজানা পাঠানকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। কন্যা ফারিহা তাবাসসুম পাঠান ও পুত্র রওশন হোসেন।
আমরা টিম ‘থ্রি সিক্সটি-বিনোদনের পক্ষে থেকে তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।