BEKAS ভালোবাসা ও আবেগের সিনেমা

জানা এবং ডানা গৃহহীন এতিম দুই ভাইকে নিয়ে তৈরি কুর্দিশ মুভি BEKAS। সিনেমাটি কারজন কাদেরের রচনা ও পরিচালনায় ২০১২ সালে মুক্তি পায়। দুই মিলিয়ন ডলারের এ মুভিটি আশানুরূপ ব্যবসা না করতে পারলেও জানা এবং ডানার অভিনয় উপভোগ করেন দর্শকরা। সাথে ভিডিওগ্রাফি এবং চিত্রনাট্য মুগ্ধ করে সিনেমাপ্রেমিকদের।

কুর্দিশ এ মুভিটি কোন বড় ঘটনা নিয়ে তৈরি না। কেবল দুই এতিম ভাইয়ের ছেলেমানুষি, দুষ্টামী আর তাদের মৃত বাবা মাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য আমেরিকা গিয়ে সুপারম্যানের সাথে দেখা করার চেষ্টা – এ কাহিনী নিয়ে সিনেমাটি এগিয়ে যায়। ছোট ভাই জানার বয়স ছয় আর বড়টার বয়স ১০-১২ বছর। তারা জুতা কালি করে জীবন চালায়, থাকার কোন জায়গা না থাকায় কারো বাসার ছাদে বা বারান্দায় রাত কাটায়।

সুপারম্যানের সাথে দেখা করার জন্য দুই ভাই গাধার উপর চড়ে এগিয়ে যায় অজানার উদ্দেশ্যে। যদিও তাদের কাছে ছিল বিশ্ব মানচিত্র। আর সে মানচিত্র দেখে তারা এ সিদ্ধান্তে আসে ইরাক থেকে আমেরিকা বেশি দূরে নয়। সেখানে গেলেই তারা সুপারম্যানের সাথে দেখা করতে পারবে এবং সুপারম্যান তাদের মৃত বাবা-মাকে তাদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবে। আর সে বিশ্বাস তাদের জন্ম নিয়েছে সুপারম্যান মুভি দেখার পর। ছোট ভাই জানা একটা তালিকা করে সুপারম্যান এর জন্য। যাদেরকে শাস্তি দিলে ইরাক অবস্থার উন্নতি হবে। সেখানে প্রথম নামটাই ছিলো সাদ্দাম হোসেনের। আর এ মুভিটার পটভূমি ১৯৯০ সালের ইরাক নিয়ে।
অন্যদিকে বড় ভাই ডানার মনোযোগ ছিলো আমেরিকায় কিভাবে যাওয়া যায় সেসব বিষয় নিয়ে। তাই ব্যস্ত ছিলো পাসপোর্ট তৈরি, যাওয়ার জন্য গাধা কেনা এবং বর্ডার পারি দেয়া। যা শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়নি। তবে তারা তাদের স্বপ্নের পেছনে ঠিকই ছুটে চলে। বিভিন্ন ঘটনা ও দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে সিনেমাটি এগিয়ে যায়। গাধার উপর চড়ে, পায়ে হেঁটে, ট্রাকে করে, সীমান্ত রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাইওয়ের রাস্তা দিয়ে হেঁটে তারা চেষ্টা করে আমেরিকা যেতে।
কিন্তু বড় ভাই ডানা রাস্তার পাশে একটা স্থলমাইনে পা দেয় এবং বুঝতে পারে পা সরালে তারা দুই ভাই মারা যাবে। তাই বড় ভাই ছোট ভাইকে বলছে যেন সে এখান থেকে দূরে সরে যায় যাতে জানা বেঁচে যায়। কিন্তু ছোট ভাই জানা নাছোড়বান্দা সে কিছুতেই বড় ভাইকে ছেড়ে যাবে না। বাধ্য হয়ে ডানা পাথর ছুঁড়ে মারে জানাকে যেন দূরে চলে যায় । ছোট ভাই বলে “আমি আমেরিকা যেতে চাই না, সুপারম্যানকেও চাইনা, আমি তোমাকে চাই, তুমিই আমার সুপারম্যান”।

এ সিনেমাটি অন্য কারো ভালো নাও লাগতে পারে। আমি জানিনা আমার এত ভালো লাগছে কেন! হয়তো বা মা-বাবা, ভাই-বোন ছেড়ে প্রবাসে আছি বলেই সিনেমাটি দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি।
কুর্দিশ ভাষায় নির্মিত এ সিনেমাটি সাবটাইটেল দিয়ে দেখলে হতাশ হবেন না এ নিশ্চয়তা দিতে পারি।

এমন আরো সংবাদ

সর্বশেষ বিনোদন