গত ১৩ আগস্ট ভারতীয় ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম হইচইয়ে মুক্তি পায় বাংলাদেশি লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের লেখা একই নামের রহস্য উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’। এই সিরিজে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। আর পশ্চিমবঙ্গের অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে আছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অঞ্জন দত্ত, রাহুল বোস ও অনির্বাণ চক্রবর্তী।
প্রবাসী লেখক তসলিমা নাসরিন ১৯৯৪ সাল থেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি জানালেন, সম্প্রতি তিনি ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ সিরিজটি দেখেছেন। আর তাতে শিল্পীদের কাজে তিনি মুগ্ধ; বিশেষ করে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি।
তসলিমা বলেন, “এই সিরিজের যে ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লেগেছে তা হলো যেহেতু দুই বাংলার অভিনেতা অভিনেত্রী অভিনয় করছেন, তাই ঘটনা ঘটিয়েছেন বর্ডারের কাছের শহরে। কেউ মুসলমান, কেউ হিন্দু। গল্পে বাংলাদেশ থেকে যে এসেছে, সে বাংলাদেশের অ্যাকসেন্টে বা উচ্চারণে বাংলা বলছে, আর যে পশ্চিমবাংলায় বড় হয়েছে, সে পশ্চিমবাংলার, মূলত কলকাতার উচ্চারণে বাংলা বলছে। ব্যতিক্রম বাংলাদেশ থেকে আসা আতর আলীর চরিত্রে অভিনয় করা পশ্চিমবঙ্গের অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তিনি এমনই রপ্ত করেছেন বাঙাল উচ্চারণ, যে, তাঁকে প্রায় নিখুঁতই বলা যায়। বিরল প্রতিভা বটে। মুসকান জুবেরির চরিত্রে বাঁধন যতই চেষ্টা করুন পশ্চিমবঙ্গের উচ্চারণে বাংলা বলতে, তাঁর বাঙাল উচ্চারণ বেরিয়ে এসেছে। সেই উচ্চারণ মানিয়ে যায়, কারণ গল্পে তাঁর জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশে।’’
তবে গত ১৯ নভেম্বর মুক্তি পাওয়া অনির্বাণ পরিচালিত ও অভিনীত ‘মন্দার’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে অবশ্য তিনি খুশি নন। সিরিজের প্রচারণায় বলা হয়েছিল, ষোড়শ শতাব্দীর বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক উইলিয়াম শেকসপিয়ারের নাটক ‘ম্যাকবেথ’-এর ছায়া অবলম্বনে সিরিজটি নির্মিত হয়েছে। এই সিরিজ প্রসঙ্গে তসলিমা আরেকটি পোস্টে বলেন, “তার চেয়ে ভালো গ্লোব থিয়েটারে স্বশরীরে গিয়ে সত্যিকারের ম্যাকবেথ দেখে আসা। কেউ যেন ভাব্বেন না অনির্বাণ ভট্টচার্যকে আমি ভালোবাসি না। খুব বাসি। তাঁর অভিনয় অসাধারণ। কিন্তু তাঁর পরিচালনা? মাফ করবেন, বেশি দিতে পারছি না, আপাতত দশে দুই।’’
পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র ও ওয়েব সিরিজে বর্তমানে সরব পদচারণা বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের। প্রসঙ্গক্রমে টলিউডে তার কথাও পোস্টে উল্লেখ করেন তসলিমা। বলেন, “জয়া আহসান যখন কলকাতার মেয়ে চরিত্রে অভিনয় করেন, তখন তাঁর কথা শুনলে তাঁকে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। কারণ যতই চেষ্টা তিনি করুন, তিনি যে কলকাতার মেয়ে নন, তা তার উচ্চারণে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।’’