‘আগুনপাখি’র স্রষ্টা কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আজ সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত নয়টার দিকে রাজশাহী শহরের নিজ বাড়িতে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য হাসান আজিজুল হকের মরদেহ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে নেয়া হবে। বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এই গুণী কথাশিল্পীর জন্ম ১৯৩৯ সালে, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে। ১৯৫৪ সালে যবগ্রাম মহারানী কাশীশ্বরী উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫৬ সালে খুলনার ব্রজলাল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছিল তাকে। ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে দর্শনে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৬০ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন।
‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, ‘তৃষ্ণা’, ‘উত্তরবসন্তে’, ‘বিমর্ষ রাত্রি, প্রথম প্রহর’, ‘পরবাসী’, ‘আমৃত্যু’, ‘আজীবন’, ‘জীবন ঘষে আগুন’, ‘খাঁচা’, ‘ভূষণের একদিন’, ‘আগুনপাখি’, ‘ফেরা’, ‘মন তার শঙ্খিনী’, ‘মাটির তলার মাটি’, ‘শোণিত সেতু’, ‘ঘরগেরস্থি’, ‘সরল হিংসা’, ‘খনন’, ‘সমুখে শান্তির পারাবার’, ‘অচিন পাখি’, ‘মা-মেয়ের সংসার’, ‘বিধবাদের কথা’, ‘সারা দুপুর’ ও ‘কেউ আসেনি’ ইত্যাদি তার লেখা বিখ্যাত বই।
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য হাসান আজিজুল হক ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে একুশে পদক এবং ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। ‘আগুনপাখি’র জন্য অর্জন করেন প্রথম আলো বর্ষসেরা বই এবং আনন্দ পুরস্কার।