আজ ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশি ব্যান্ড সঙ্গীতের অন্যতম পুরোধা আইয়ুব বাচ্চুর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৮ সালের এই দিনে ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবির দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু। একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক বাচ্চু ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন। পরিবারের নিষেধ সত্ত্বেও গানের প্রতি ভালোবাসা থেকে তার সৃষ্টি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
‘আগলি বয়েজ’ ব্যান্ডের মাধ্যমে সঙ্গীত অঙ্গনে পা রাখেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৭৮ সালে তিনি ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডে যোগ দেন। আর ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ‘সোলস’ ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট ছিলেন। ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল তিনি ‘লিটল রিভার ব্যান্ড’ গঠন করেন, যা পরে ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড’ বা ‘এলআরবি’ নামে জনপ্রিয়তা পায়। এর প্রথম অ্যালবাম ‘এলআরবি’ পরের বছরই মুক্তি পায়।
এলআরবির অন্য অ্যালবামগুলো হলো – ‘সুখ’ (১৯৯৩), ‘তবুও’ (১৯৯৪), ‘ঘুমন্ত শহরে’ (১৯৯৫), ‘ফেরারি মন’ (১৯৯৬), ‘আমাদের’ (১৯৯৮), ‘বিস্ময়’ (১৯৯৮), ‘মন চাইলে মন পাবে’ (২০০১), ‘অচেনা জীবন’ (২০০৩), ‘মনে আছে নাকি নাই’ (২০০৫), ‘স্পর্শ’ (২০০৮), ‘যুদ্ধ’ (২০১২), ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’ (২০১৬)।
১৯৮৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘রক্তগোলাপ’ আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম একক অ্যালবাম। দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’ (১৯৮৮) দিয়ে সাফল্যের স্বাদ পান তিনি, আর তৃতীয় অ্যালবাম ‘কষ্ট’ (১৯৯৫)-এর প্রায় সবকয়টি গানই জনপ্রিয়তা পায়। বাচ্চুর অন্য একক অ্যালবামগুলো হলো ‘সময়’ (১৯৯৮), ‘একা’ (১৯৯৯), ‘প্রেম তুমি কি’ (২০০২), ‘দুটি মন’ (২০০২), ‘কাফেলা’ (২০০২), ‘রিমঝিম বৃষ্টি’ (২০০৮), ‘বলিনি কখনো’ (২০০৯), ‘জীবনের গল্প’ (২০১৫)।
প্রায় তিন দশকের সঙ্গীতজীবনে ‘চলো বদলে যাই’, ‘হাসতে দেখো’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘রুপালি গিটার’, ‘মেয়ে’, ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘উড়াল দেবো আকাশে’, ‘আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘সেই তারা ভরা রাতে’, ‘আমি তো প্রেমে পড়িনি’, ‘তিন পুরুষ’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’ সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা তিনি। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকেও কণ্ঠ দিয়েছেন – ‘লুটতরাজ’ চলচ্চিত্রের ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’, আর ‘আম্মাজান’ চলচ্চিত্রের শিরোনাম গানে। মৃত্যুর দুইদিন আগে, ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর রংপুরে জীবনের শেষ কনসার্টে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি।