তাসভির সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশি নির্মাতা সোহেল রহমানের ক্রিয়েটিভ ডকুমেন্টারি ‘দ্য আইসক্রিম সেলার্স’ প্রদর্শিত হয়েছে।
দৈনিক প্রথম আলো সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে ১ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠিত এ উৎসবে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ৮৭টি চলচ্চিত্রের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে সোহেলের ‘দ্য আইসক্রিম সেলার্স’। এছাড়াও জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের গোল্ডেন ট্রি ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, কানাডার টরোন্টোর মাল্টিকালচারাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও মন্ট্রিলের সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, এবং কলম্বিয়ার বোগোটায় ফেস্টিভ্যাল ইন্টারন্যাশনাল ডে সিনে/এল সিনে সুমা ফাজ উৎসবে প্রদর্শনের জন্যও নির্বাচিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি।
আয়াস ও আসিয়া নামের দুই ভাইবোনকে নিয়ে ‘দ্য আইসক্রিম সেলার্স’ চলচ্চিত্রের গল্প। রোহিঙ্গা গণহত্যার পর মায়ের সঙ্গে পালিয়ে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে তারা, কিন্তু বাবা আটক মিয়ানমারের জেলে। বাবাকে মুক্ত করতে যে বড় অঙ্কের টাকা দরকার, তা জোগাড় করতে সারাদিন ক্যাম্পে আইসক্রিম বিক্রি করে তারা। স্বপ্ন, বাবাকে একদিন ঠিকই জেল থেকে ছাড়িয়ে আনবে।
সোহেল জানান, এই ক্রিয়েটিভ ডকুমেন্টারি ফিল্মের মূল উদ্দেশ্য, দেশছাড়া নিরীহ কিছু মানুষের মুখে ভাষা দেওয়া। তাদের কথা দুনিয়াকে জানানো। এখানে কোনো অভিনয় নেই, আবার সংবাদ বা তথ্যচিত্রও নয় এটি। বলেন, “ছবির পরিচালনা থেকে শুরু করে চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ আমিই করেছি। একা একা ক্যামেরা হাতে ক্যাম্প ঘুরে ঘুরে শুট করেছি। একটা মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে ছবিটি করতে নামি। অনেক জায়গায় ফান্ডের জন্য আবেদন করি। প্রযোজক খুঁজি। কিন্তু কোথাও কোনো সাড়া পাইনি। তবু হাল ছাড়িনি। নিজের যা কিছু আছে, তা নিয়ে নেমে পড়ি। একটা জিরো বাজেটের ফিল্ম দীর্ঘ প্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের পর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আলোর মুখ দেখছে, এটা অনেক বড় পাওয়া। তবে এর চেয়ে বেশি ভালো লাগছে, বিশ্বের মানুষ রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর গণহত্যার গল্প জানতে পারবেন।’’
সোহেল বর্তমানে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে চার পর্তুগিজ জেলের দুঃসাহসিক জীবন নিয়ে নির্মাণ করছেন ‘ড্যান্সিং উইথ দ্য সি’।