না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন বাঙালি লেখক, কার্টুনিস্ট ও চলচ্চিত্র নির্মাতা গৌতম বেনেগাল। তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৬ বছর। হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান। ২০১০ সালের ‘দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য ক্রাউন অফ স্টোন’ অ্যানিমেশন ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন এই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মানুষটি। তার চলে যাওয়াকে শিল্পকলার জগতে ‘ইন্দ্রপতন’ বলছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। ।
তার অকস্মাৎ মৃত্যুতে আঘাত পেয়েছেন বহু মানুষ। তার বন্ধু শিল্পী কাইজাদ কোটওয়াল বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি গৌতম বেনেগাল আর নেই! গতকালই ওর সঙ্গে মেসেজে কত কথা হল। ভারতীয় শিল্পী, বুদ্ধিজীবীদের জগতে একটা ইন্দ্রপতন…এখনও আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।’
সরকারের বিভিন্ন অন্যায়-অবিচার নিয়ে সবসময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোচ্চার ছিলেন গৌতম। সম্প্রতি কেন্দ্রের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিলের সমালোচনা করেছেন এই গুণী নির্মাতা।
তার জন্ম কলকাতায়, ১৯৬৫ সালে। অল্প বয়সেই শিল্পকলায় প্রতিভার পরিচয় দেন। তার যখন ১৬ বছর বয়স তখন তাকে সত্যজিৎ রায় তার সম্পাদিত সন্দেশ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতে ও আঁকতে আমন্ত্রণ জানান। গৌতম তখন থেকেই সন্দেশ-এ কাজ শুরু করেন। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক সাহিত্যে পড়াশোনা করেছেন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন থেকে অ্যানিমেশনে করেছেন ডিপ্লোমা।
তার আরো দুটি জনপ্রিয় অ্যানিমেশন ছবি—‘কেলভিনেটর পেঙ্গুইন’ ও ‘হ্যান্ডিপ্ল্যাস্ট বয়’। দেশি-বিদেশি বহু চলচ্চিত্র উৎসবে তার ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ডিএনএসহ বেশকিছু সংবাদমাধ্যমে কার্টুনিস্ট, সাংবাদিক ও চিত্রশিল্পী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন গৌতম। আনন্দ পাবলিশার্সের আনন্দমেলা ম্যাগাজিনেও কাজ করেছেন। ভারতের কিংবদন্তি কার্টুনিস্ট রাম মোহনের সঙ্গে মুম্বাইয়ে দুই বছর কাজ করার সুযোগ হয় তার। হার্পারকলিন্স ইন্ডিয়া থেকে বেরিয়েছে তার গল্পের বই ‘দ্য গ্রিন অব বেঙ্গল এন্ড আদার স্টোরিস’।