দুই বাংলার নন্দিত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের শারীরিক অবস্থা ভালো নেই। শ্বাসনালী ও ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে কলকাতার একটি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন তিনি। তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আগে করোনার ভয় থাকলেও দৈনিক আনন্দবাজার হাসপাতালের বরাতে জানিয়েছে, তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
১১ জুন (শুক্রবার) সকালে এই ৭৯ বছর বয়সী সাহিত্যিকের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে তার অবস্থা সংকটাপন্ন। তার অসুস্থতায় উদ্বিগ্ন সাহিত্যিক ও বিনোদন মহলের অনেকে। তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে উভয় বাংলায় থাকা তার অগণিত পাঠক।
চা বাগান ঘেরা ডুয়ার্সে ১৯৪৪ সালে এই জীবন্ত কিংবদন্তি বাঙালি কথাশিল্পীর জন্ম। পড়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল, কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৬ সালে সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’ প্রকাশিত হয়। তারপর আর থেমে থাকেননি, একের পর এক উপন্যাস-গল্প আসতে থাকে তার জাদুর কলম থেকে। উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ, সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, মৌষলকাল-এর মতো উপন্যাস লিখে বাঙালি পাঠকদের মনে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন এই শক্তিমান কথাসাহিত্যিক। ‘অর্জুন’ তার সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র। তার গল্প-উপন্যাস অবলম্বনে বহু সিনেমা ও নাটক নির্মিত হয়েছে।
লিখেছেন দেড়শরও বেশি উপন্যাস। তার সৃষ্ট চরিত্র অনিমেষ-মাধবীলতা-অর্ক-দীপাবলী পাঠককে রোমান্টিকতায় ভাসিয়েছে। মহানগরের মধ্যবিত্ত জীবনের দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও প্রেম তার গল্প-উপন্যাসে যেভাবে এসেছে তা খুব কম কথাসাহিত্যেই পাওয়া যায়। তার লেখায় আজো বুঁদ হয়ে থাকে তার পাঠকেরা, তারা আজো অভিভূত সমরেশ-জাদুতে।
১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন সমরেশ মজুমদার। ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান। এছাড়াও বঙ্কিম পুরস্কার, আইয়াইএমএস পুরস্কারসহ একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন সমরেশ।