ঢালিউডের অভিনয়শিল্পী স্ত্রী তমা মির্জার বিরুদ্ধে অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগ তুলেছেন স্বামী হিশাম চিশতী। প্রমাণ হিসেবে তার অন্তরঙ্গ ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। বুধবার বাংলাদেশ সময় বিকেলে ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত স্ট্যাটাস দিলে রাত সোয়া ৯টায় দেখা যায় হিশামের ফেসবুক আইডিটি নেই। অন্যদিকে চরিত্র নিয়ে অভিযোগ তোলায় স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন তমা মির্জা।
হিশাম চিশতী কানাডা থেকে ফেসবুকে ইংরেজিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ভাইয়েরা, আমি শিগগিরই লাইভে আসছি। আমি প্রমাণ করে দেব, তমা মির্জা কীভাবে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে…আমি সব ভিডিও ফাঁস করে দেব। ১৬ বছরের নিচে অপ্রাপ্তবয়স্করা এই লাইভ দেখবে না। এতে সে মরল কি মরল না, তাতে আমার আর কিছু আসে যায় না। আমি যা করতে যাচ্ছি, এটা তার প্রাপ্য।’ এই স্ট্যাটাস দেওয়ার পাঁচ ঘণ্টার ভেতর হিশাম চিশতীর আইডি ডি-অ্যাকটিভ হয়ে যায় বলে জানান তিনি।
হিশামের দাবি বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে খোঁজখবর নিতে শুরু করেন হিশাম। এ সময় তার পরিচিত বন্ধুবান্ধব ও তমার পরিচিত অনেকেই তাকে তমার ব্যাপারে নানা রকম তথ্য দিতে থাকেন। তাঁদের কেউ কেউ তমার অপকর্মের ভিডিও সরবরাহ করেছেন স্বামী হিশামকে। হিশাম বলেন, ‘বিশ্বাস করেই বিয়ে করেছিলাম। সেই মর্যাদা তিনি রাখেননি। তাঁকে বলব, দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে এসব যায় না। আপনি যা করবেন, দেশের বাইরে গিয়ে করেন।’
ভিডিওগুলো ফেসবুকে প্রকাশের হুমকি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রমাণ হাতে নিয়েই আমি মুখ খুলেছি। ভিডিওগুলো ফেসবুকে ছাড়তে চেয়েছিলাম। ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছে। লগইন করতে পারছি না। এখন পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব।’
এসব নিয়ে কথা বলতে চাননি তমা। তিনি জানান, সামাজিকভাবে তাকে হেয় করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় তিনি এর জবাব দেবেন। তমা মির্জা বলেন, ‘আমি তাকে আগেও সম্মান করতাম, এখনো সম্মান করি। ভবিষ্যতেও তাকে সম্মান করব। এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে তাঁকে ছোট করতে চাই না। আমরা এখনো স্বামী-স্ত্রী। যে ইস্যুগুলো তিনি সামনে নিয়ে এসেছেন, এসব নিয়ে আমি আদালতে লড়ব।’
গত ডিসেম্বর মাসে যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্বামী হিশাম চিশতীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তমা মির্জা। মামলায় তিনি উল্লেখ করেছিলেন, বিয়ের পর থেকে হিশাম চিশতী বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য তাকে মারধর করতেন। এ ছাড়া অকারণেও গায়ে হাত তুলতেন, পরিচয় গোপন করে ফেসবুকে তমাকে নিয়ে কুরুচিকর কথা লিখতেন। তমার দাবি, হিশাম তাঁর মা-বাবাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন এবং হত্যার হুমকি দিয়েছেন।
তমার মামলার পর, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে হিশাম চিশতী পাল্টা মামলা করেন। মামলায় তিনি স্ত্রী তমা, তার মা-বাবা ও গাড়িচালকের নাম উল্লেখ করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে তমা তার মা-বাবার প্ররোচনায় মোট ২০ লাখ টাকা ধার নেন। সেই ধারের টাকা ফেরত চাইলে কালক্ষেপণ শুরু করেন। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর হিশাম কানাডা থেকে দেশে ফিরে আসেন। একপর্যায়ে ৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে তমা হিশামকে তার বাবার বাড্ডার বাসায় ডেকে নেন। সেই রাতে নানা বিষয়ে আলোচনার পর ধার নেওয়া ২০ লাখ টাকা ফেরত চাইলে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হিশামের ওপর ক্ষিপ্ত বাড়ির সদস্যরা তাকে আক্রমণ করেন। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে খুন করার চেষ্টা করা হয়।