সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর আর নেই। আজ রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে এককভাবে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করেছেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
করোনা-আক্রান্ত হয়ে গত চার সপ্তাহ ধরে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন লতা। ভারতীয় গণমাধ্যম জি ২৪ ঘণ্টা জানিয়েছে, অবস্থার উন্নতিও হচ্ছিল কিছুটা। কিন্তু গতকাল (৫ ফেব্রুয়ারি) হঠাৎ করে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাকে নিতে হয় ভেন্টিলেশনে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। সারাবিশ্বের কোটি কোটি সংগীতপ্রেমীকে কাঁদিয়ে সবার প্রিয় ‘লতাজি’ পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের এক সংগীত পরিবারে জন্ম হয় তার। বাবা পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন মারাঠি সংগীত জগতের পরিচিত নাম। মাত্র ১৩ বছর বয়সে লতা সিনেমার জন্য প্রথম গান রেকর্ড করেন। ক্যারিয়ার গড়তে ১৯৪৫ সালে মুম্বাইয়ে পা রাখেন সংগীতের এই মুকুটহীন সম্রাজ্ঞী।
১৯৪৮ সালে প্রথম হিন্দি ছবি ‘মজবুর’-এ কণ্ঠ দেন তিনি। তারপর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। দিনে দিনে হয়ে ওঠেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী কণ্ঠশিল্পী। নিজেই নিজস্ব ঘরানার গোড়া পত্তন করেন তিনি। যা আজো অটুট রয়েছে।
‘জাগো মোহন প্যায়ারে’, ‘আজা পিয়া তোহে প্যায়ার দু’, ‘লগ জা গলে’, ‘জিস পথ পে চলা উস পথ পে মুঝে আঁচল তো বিছা দে’, ‘ছোট সে সারি দুনিয়া কিসিকে লিয়ে ইয়ে মুনাসিব না আদমি কে লিয়ে’, ‘হাম কো হামিসে চুরালো’, ‘রঙ্গিলা বাঁশিতে কে ডাকে’, ‘হায়রে পোড়া বাঁশি’, ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে’, ‘প্রেম একবারই এসেছিল নিরবে’—এমন অসংখ্য স্মরণীয় গানের জাদুকর তিনি। ২৫ হাজার গান গেয়ে তিনি বিশ্বরেকর্ডও গড়েন।
ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষাসহ বিদেশি ভাষাতে গান করেছেন তিনি। ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার ইত্যাদি নানা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন তিনি। তার আন্তর্জাতিক পুরস্কারের তালিকাও দীর্ঘ। তার প্রয়াণে ভারতে দুদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।