হইচই-এর ‘মহানগর’ নিয়ে রীতিমতো হইচই হচ্ছে। আট পর্বের ওয়েব সিরিজটির নির্দেশনা, সিনেমাটোগ্রাফি, চিত্রনাট্যকে ছাপিয়ে গেছে ওসি হারুনের ভূমিকায় অভিনেতা মোশাররফ করিমের তুখোড় অভিনয়। একেকটি পর্বের একেকটি নাম—ঈশানের মেঘ, চিচিং ফাঁক, শাপে বর, গলার কাঁটা, অমাবস্যার চাঁদ, অন্ধের যষ্ঠি, গোঁড়ায় গলদ ও কিস্তিমাত। কিন্তু প্রতিটি পর্বের কেন্দ্রবিন্দু মোশাররফ করিম। তার অভিনয়ের প্রশংসা হচ্ছে দেশ ও দেশের বাইরে।
ভারতের বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র সমালোচক অনুপমা চোপরার ফিল্ম কম্পেনিয়ন–এ শনিবার প্রকাশিত একটি লেখায় মোশাররফ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘করিম অন্যতম অভিনেতা যিনি কিছু না করলেও আনন্দ পাওয়া যায়।’ মহানগরের নির্মাণ ভালো হওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এটি প্রথাগত ক্রাইম থ্রিলার নয়—এর গল্প ভিন্ন। বলা হয়েছে, ‘এটি সেই ধরনের ক্রাইম থ্রিলার নয় যেখানে অপরাধীকে ধরার চেষ্টা করা হয়—বরং মহানগর অপরাধের সমাধানের কথা বলে।’
সিনেস্তান বলেছে, ‘মোশাররফ প্রতিটি সেকেন্ড জানান দিয়েছেন তিনি ক্রিনে আছেন। তার চোখ কথা বলে—তার কণ্ঠের ওঠানামা এবং বডি ল্যাংগুয়েজ বিনোদন ভরপুর অভিজ্ঞতা দেয়।’ বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড বলছে, ‘মহানগর প্রমাণ করেছে, শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দিতে ওয়েব সিরিজ মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এবং বিনোদন জগতে বাংলাদেশ ভালো কন্টেন্ট সরবরাহের সক্ষমতা রাখে।’ লেটস ওটিটি তাদের রিভিউতে লিখেছে, ‘অবশেষে হইচই এমন সিরিজ তৈরি করেছে যা তারা গর্বের সঙ্গে দুনিয়াকে দেখাতে পারে।’
ওপার বাংলাতেও তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে সিরিজটি। সাব-ইন্সপেক্টর মলয়ের চরিত্রে মোস্তাফিজুর নুর ইমরানের অভিনয়ও চোখে লেগে থাকে। বড় বড় তারকার দাপটে হারিয়ে যায়নি চরিত্রটি। অভিযুক্ত আফনানের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শ্যামল মাওলা। তার অভিনয়ও প্রশংসার দাবিদার। এসি শাহানার ভূমিকায় জাকিয়া বারী মমের চরিত্রটি আরো জোরালো হতে পারতো—তবে ভালো করেছেন।
এসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টচার্য টুইটারে লিখেছেন, ‘খাসা লাগল। তকদীর, মহানগর…। প্রত্যাশা বাড়ল। ধন্যবাদ আশফাক নিপুণ। মোশারফ করিম মশাই, থ্যাংক ইউ ফর দ্য অ্যাক্টিং ক্লাস।’ সিরিজে আরো অভিনয় করেছেন, লুৎফর রহমান জর্জ, নাসিরউদ্দিন খান, শাহেদ আলী প্রমুখ। সিরিজটির পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার আশফাক নিপুন।
গত ২৫ জুন মুক্তি পায় ‘মহানগর’। টানটান উত্তেজনা নিয়ে আটটি পর্ব দেখার পর বেশকিছু প্রশ্ন সামনে আসে। আন্দাজ করা যায়—এসবের উত্তর মিলবে মহানগরের পরের সিজনে। ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে দুই বাংলার দর্শকদের।