প্রবাসী লেখক তসলিমা নাসরিন অবশেষে বুঝতে পারলেন তার ধারনা ভুল। যার পক্ষ তিনি নিয়েছিলেন তাকে ‘যতটা না বিপ্লবী তার চেয়ে বেশি’ ভেবে নিয়েছিলেন তিনি। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ১৬ সেপ্টেম্বর স্বীকার করেছেন এই বিতর্কিত লেখক।
তার ভুল ভেঙেছে টলিউড তারকা নুসরাত জাহান সম্পর্কে। নুসরাতের সন্তান কার এনিয়ে যখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড়—তখন তসলিমা নাসরিন নুসরাতের পক্ষ নিয়েছিলেন। সন্তানের বাবা কে সেবিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়ার পক্ষে ছিলেন না ‘লজ্জা’, ‘নির্বাচিত কলাম’ ও ‘আমার মেয়েবেলা’র লেখক।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি নুসরাতকে বাহবা দেয়া স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তসলিমা ভেবেছিলেন, নুসরাত ‘সন্তানকে শুধু নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দেবে’। তসলিমা মন্তব্য করেছেন, ‘নুসরাত আসলে অন্য যে কোনো রমণীর মতোই রমণী’। এমন নারীর পক্ষ নেয়াকে তিনি ‘সময় নষ্ট করা’ মনে করছেন। পোস্টের শেষের দিকে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কোনো ট্রাডিশানাল মেয়ের চেয়ে নুসরাতের তফাৎটা কোথায়?’
তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো :
কলকাতার অভিনেত্রী নুসরাতকে সে যতটা না বিল্পবী তার চেয়ে বেশি ভেবে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম নুসরাত তার সন্তানকে শুধু নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দেবে। কার স্পার্ম সে নিয়েছে গর্ভবতী হওয়ার জন্য, সেটা মোটেও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হবে না। কিন্তু না, নুসরাত আসলে অন্য যে কোনো রমণীর মতোই রমণী। সে সন্তানের বার্থ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করেছে সন্তানের পিতার নাম। তার সর্বক্ষণের সঙ্গীই সন্তানের পিতা। নিখিলের সঙ্গে ভারতবর্ষে তার বিয়ে রেজিস্ট্র হয়নি, সুতরাং নিখিলকে তার স্বামী না বলার পেছনে যুক্তি আছে। কিন্তু এইযে লুকোচুরি সন্তানের পিতা কে তা জানানোর ব্যাপারে , তার দরকার ছিল না। আমি অবাক হবো না যদি কোনোদিন প্রকাশ হয় যে গোপনে সে যশকে বিয়েও করেছে। তাহলে যে কোনো ট্রাডিশানাল মেয়ের চেয়ে নুসরাতের তফাৎটা কোথায়?
প্রচুর লেখালেখি, প্রচুর স্বাগত জানানো, শুভেচ্ছা জানানো, স্যালুট জানানো—এসব বরং এক্সট্রাঅরডিনারি সাহসী এবং পুরুষতন্ত্রের ছক ভাঙ্গা মেয়েদের জন্য তোলা থাকুক। ট্রাডিশানাল মেয়েদের পেছনে সময় নষ্ট করা, তাদের বাহবা দেওয়া আপাতত স্থগিত থাকুক।