চার শিল্পীর এক গান, ‘ধূসর পেরিয়ে রঙিন সময় চাই’

করোনায় পৃথিবীর নাজেহাল। উবে গেছে রঙ ও হাসি। ধূসর পৃথিবীতে মানুষের হাহাকার। আবার কবে রঙিন হবে পৃথিবী কে জানে! তারপরও মানুষ আশায় বুক বাঁধে। দিন ফিরবে, রঙে রঙিন হবে জীবন, মানুষের মুখে ফুটবে হাসি। সেই প্রার্থনাই যেন ঝরে পড়লো ‘ধূসর পেরিয়ে রঙিন সময় চাই, জীবনের রং ফিরে পাক সব্বাই’ গানটিতে। বিশ্ব সঙ্গীত দিবস উপলক্ষে এশিয়ান পেইন্টসের জন্য গানটি লিখেছেন জনপ্রিয় কবি শ্রীজাত। সুর ও সঙ্গীত দিয়েছেন জয় সরকার। আর গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন অনুপম রায়, রূপম ইসলাম, লোপামুদ্রা এবং লগ্নজিতা চক্রবর্তী। সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের ভাবনায় তৈরি করা হয়েছে গানের মিউজিক ভিডিও।

গানের একেকটি অংশ গেয়েছেন একেক শিল্পী। গানে গানে অনুপম বলছেন , মহামারির কারণে হাওড়া ব্রিজের উপর ছড়িয়ে পড়া সূর্যের প্রথম আলো যেন অনেকটাই ফ্যাকাশে। পার্ক স্ট্রিটও আর আগের মতো ঝলমল করে না। লোপামুদ্রার চোখে বর্ণহীন কুমোরটুলি পাড়া এবং কলেজ স্ট্রিটের বইয়ের দোকানগুলো। লগ্নজিতা খুঁজে বেড়াচ্ছেন রঙিন জার্সির সমাবেশ। যে রঙে রঙিন হয় মাঠ। গড়িয়াহাটের ফুটপাথে মানুষের ভিড় নেই। রূপম ইসলামের মুখে নতুন প্রজন্মের বন্দনা। তারাই পারে জীবনের রঙগুলো ফিরিয়ে আনতে। রূপম চান, তারুণ্যের রঙে আবারো ঝলমলিয়ে উঠুক প্রিয় কলকাতা।

অনেকদিন পর আবার গান করা, শুটিং করা—তাও আবার অনেকে একসঙ্গে! ভালো লাগারই কথা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রূপম বলেছেন, ‘কত দিন পর শ্যুটিং করে মনে হল, স্বাভাবিক জীবনের অভিনয়টুকু তো হল! এই কাজ নতুন সূচনার বার্তা বহন করুক— এটাই চাই।’ অন্যদিক অনুপম বলেছেন, ‘কলকাতা শুধুই কংক্রিটের শহর নয়। এ শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে জীবনের হাজারো রঙ। এই কঠিন সময়ের জাঁতাকলে কিছুটা ধূসর দেখালেও কলেজ স্ট্রিট, কফি হাউস থেকে ভিক্টোরিয়া, শহর কলকাতা আবারও জীবনের রং খুঁজে পেতে প্রস্তুত।’

নতুন গানের মিউজিক ভিডিও শেয়ার করে লোপামুদ্রা লিখেছেন, ‘এই আবছায়া সময়ের মধ্যেও আমরা রঙিন স্বপ্ন দেখতে জানি।’ এর আগে করোনা আক্রান্ত রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সংগীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র। তাদের সঙ্গে আড্ডা, গল্প, গান শুনিয়ে মন ভালো করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

আর লগ্নজিতা চক্রবর্তী দেশজুড়ে টিকাকরণ নিয়ে মানুষকে উৎসাহিত করতে কদিন আগেও টিকা কেন্দ্রে ছুটে গেছেন। মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন টিকাবিষয়ক সচেতনতার বার্তা।

কবি শ্রীজাত ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অন্ধকারের মধ্যে আলো দেখতে চাওয়া মানুষের চিরকালের স্বভাব। দুঃসময়ের মধ্যে সুদিনের আশা করা তার আজীবনের অভ্যেস। আমরাও তা-ই করছি, এই সময়ে দাঁড়িয়ে। পৃথিবীর নানা অংশে ফিরে আসছে আগেকার জীবন, আগেকার রং। আমরাও অপেক্ষা করছি স্বাভাবিকতার, ছন্দের। সেই অপেক্ষার নামেই তৈরি এ-গান।’

‘এশিয়ান পেইন্টস শারদ সম্মান’ ফেসবুক পেজে ২১ জুন গানটি আপলোড করা হয়। এই প্রতিবেদন তৈরি করা পর্যন্ত ৩ মিনিট ২১ সেকেন্ডের গানটি ২ লাখ ১৫ হাজার দর্শক-শ্রোতা উপভোগ করেছে।

এমন আরো সংবাদ

সর্বশেষ বিনোদন