কেন ঈদের উপহার পেয়ে কাঁদলেন চঞ্চল চৌধুরী

২১ জুলাই ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট লিখে নিজের আবেগ প্রকাশ করলেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ‘আনন্দে কাঁদব, না কি করব, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আনন্দটুকু প্রকাশ করতে এখনো আমার চোখটা ভিজে উঠছে। আর বুকের ভেতর একটা প্রশান্তি বয়ে যাচ্ছে’, ঈদ উপহার পেয়ে আপ্লুত হয়ে ফেসবুকে লিখেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। বিশেষ এই উপহারের (পাঞ্জাবি) সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার অনেক আবেগ ও ভালোবাসা।

চঞ্চল লিখেছেন, ‘অধিকাংশ মা–বাবাই সর্বস্ব দিয়ে, সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে সন্তান লালনপালন করেন। সন্তান যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠে। অবসর জীবনে যেন সন্তানের কাছে একটু আশ্রয় পান। সন্তানের প্রথম উপার্জনের টাকায় কেনা ছোট্ট একটা উপহার স্বর্গীয় সুখ এনে দেয়। কেউ কেউ ভাবছেন, আমার ছেলে শুদ্ধ বোধ হয় প্রথম উপার্জনের টাকায় আমাকে কিছু কিনে দিয়েছে! না, আমার ছেলে শুদ্ধ তো মাত্র ক্লাস ফাইভে। তবে শুদ্ধরই এক বড় ভাই; নাম তার দিব্য জ্যোতি।’

তিনি আরো লেখেন, নাট্যকার বৃন্দাবন দাস ও অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি দম্পতির ছেলে দিব্য জ্যোতি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেই সঙ্গে একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পার্টটাইম পড়ান। মাঝেমধ্যে অভিনয় করেন টেলিভিশন, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনে। দিব্যর একটা যমজ ভাই আছে। নাম সৌম্য জ্যোতি। তিনিও পার্টটাইম পড়ান। শিক্ষকতা ও অভিনয় করেই তারা টাকা জমান।

চঞ্চল চৌধুরী, নাট্যকার বৃন্দাবন দাস ও অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি—সবার বাড়িই পাবনা। অনেক আগে থেকেই এই দুই পরিবারের মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

চঞ্চল লিখেছেন, ‘দিব্য-সৌম্য আমার সন্তানতুল্য। কিন্তু ওরা আমাকে কখনোই পিতৃস্থানীয় ভাবে না। ভাবে বন্ধু। তুই–তুকারি করে কথা বলে। কখনো আমার নাম ধরে ডাকে, কখনো আমার নাটকের কোনো চরিত্রের নামে ডাকে। আমিও ওদের আমার বন্ধু এবং সমবয়সীই ভাবি।’

চঞ্চলের চোখের সামনে একটু একটু করে বেড়ে উঠেছেন দিব্য ও সৌম্য জ্যোতি। তাদের কাছ থেকে এমন অপ্রত্যাশিত ঈদ উপহার পেয়ে আপ্লুত চঞ্চল চৌধুরী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ে চঞ্চল বুঝতে পারতেন, তার মায়ের একটি সোনার চেইনের শখ। চঞ্চলের খুব ইচ্ছা মায়ের শখটা পূরণ করবেন, কিন্তু অত টাকা কই? শেষ পর্যন্ত অনেক কষ্ট করে টিউশনির টাকা জমিয়ে মায়ের জন্য চেইন কিনেছিলেন।

সেই ঘটনা ঈদের দিন স্মরণ করে চঞ্চল লিখেছেন, ‘আমার মা সেদিন অনেক কেঁদেছিল। মায়ের সেই চোখের জল সোনার মতোই চিক চিক করছিল। চোখের জলে কতটা আনন্দ লুকিয়ে থাকে, আমি সেদিন দেখেছিলাম। আমার অনেকগুলা সন্তান। ভাগনে, ভাগনি, ভাতিজা, ভাতিজি, শুদ্ধ। সবাই তোরা মা–বাবার আশ্রয় আর আনন্দ হয়ে ওঠ। তোদের সবার জন্য আশীর্বাদ। সকল সন্তানই যেন সকল মা–বাবার আশ্রয় হয়ে ওঠে। সবাইকে ঈদ মোবারক।’

এমন আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ বিনোদন