এক মহানায়কের প্রস্থান

উপমহাদেশের কালজয়ী অভিনেতা দিলীপ কুমার আর নেই। আজ ৭ জুলাই মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে এই ‘ট্র্যাজেডি কিং’ শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত না সমস্যায় ভুগছিলেন। তার প্রয়াণে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকা ও রাজনীতিবিদেরা।

শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যার কারণে তাকে গত ৩০ জুন হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়ছিল। তখন দিলীপ কুমারকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। তারপর অবস্থা স্থিতিশীল হয়। বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথাও উঠেছিল। দিলীপ কুমার হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তার পরিবারের সদস্যরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন। টুইটে বলা হয়েছিল, ‘দিলীপ সাহেব অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন। তিনি স্থিতিশীল আছেন।’ আরো জানানো হয়েছিল, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. জলিল পার্কার তার চিকিৎসা করছেন। তারও আগে ৬ জুন রুটিন চেক-আপের জন্য দিলীপ কুমারকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

দিলীপ কুমার

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করেছেন, ‘দিলীপ কুমারজি সিনেমেটিক লেজেন্ড হিসেবে স্মরণীয় থাকবেন। তিনি অনন্য প্রতিভার অধিকারী ছিলেন…তার চলে যাওয়া সাংস্কৃতিক দুনিয়ার জন্য বিশাল ক্ষতি।’

অমিতাভ বচ্চন টুইট করেছেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠানের (ইনস্টিটিউশন) বিদায়। যখন ভারতীয় সিনেমার ইতিহাস লেখা হবে তখন তা শুরু হবে দিলীপ কুমারকে দিয়ে, শেষও হবে দিলীপ কুমারকে দিয়ে।’

অনিল কাপুর ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আমাদের পৃথিবী আজ কম আলোকিত, কেননা আমাদের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটি আমাদের ছেড়ে স্বর্গে চলে গেছে।’

করণ জোহর ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন, ‘দিলীপ কুমার সাহেব অভিনয়ের এমন আদর্শ স্থাপন করেছেন যা সবাই অনুসরণ করে। তিনি প্রকৃত অর্থে একটি ইনস্টিটিউশন।’

দিলীপ কুমারের টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জানানো হয়, স্থানীয় সময় বেলা ৫টায় মুম্বাইয়ের জুহু কবরস্থানে এই কিংবদন্তির মরদেহ দাফন করা হবে।

স্ত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে দিলীপ কুমার

দিলীপ কুমারের জন্ম ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর, অবিভক্ত ভারতের পেশওয়ারে। তার আসল নাম ইউসুফ খান। ১৯৪৪ সালে ‘জোয়ার ভাটা’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ চলচ্চিত্র-যাত্রা শুরু করেন দিলীপ কুমার। তাকে শেষবার ১৯৯৮ সালের ‘কিলা’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় তিনি চলচ্চিত্র-জগতে কাটিয়েছেন, মোট ৬২টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ‘আন’, ‘আজাদ’, ‘দেবদাস’, ‘আন্দাজ’, ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘গঙ্গা-যমুনা’, ‘ক্রান্তি’, ‘কর্মা’, ‘শক্তি’, ‘সওদাগর’, ‘মশাল’ ইত্যাদি তার অভিনীত বিখ্যাত সিনেমা।

রাষ্ট্রীয় পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণ ছাড়াও ‘দাদাসাহেব ফালকে’ এবং মোট ১৪ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।

এমন আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ বিনোদন