আসিফ আকবরের ত্রিশ

সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর ১৯৯২ সালের ১০ জুলাই ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সালমা মিতুকে। স্ত্রীর প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিজেদের প্রেমের স্মৃতিচারণ করতেও দেখা গেছে কয়েকবার।

দাম্পত্য জীবনের ২৯ বছর পেরিয়ে এবার ৩০ বছরে পা রাখতে চলছেন তারা। ০৯ জুলাই স্ত্রী সালমা আসিফ মিতুকে নিয়ে দীর্ঘ একটি পোস্ট লিখেছেন আসিফ আকবর। আসিফ লেখেন, ‘ঊনিশ বছর তিন মাস বয়সে ডেসপারেড ভালোবাসার ফলশ্রুতি হিসেবে বেগমের সঙ্গে এক ছাদের নিচে থাকা শুরু। আমি সবসময়ই ক্যাজুয়াল যেকোনো সিদ্ধান্তের ব্যাপারে। শুধু রাগের উপর নিয়ন্ত্রণটা রাখার চেষ্টায় থাকি। বিয়ের পর কঠিন সময়গুলো পার করেছি—কখনো হেরে, কখনো জিতে। একজন সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে আমার কাছে স্পোর্টসম্যানশীপটাই আসল। দেখতে দেখতে আমাদের দাম্পত্য জীবন ত্রিশ বছরে মাথা ঢুকিয়েছে। অথচ মনে হচ্ছে, সেদিনকার কথা। তিনিও ছোট ছিলেন আমিও ছোট ছিলাম। ছোট বয়সেই আমরা বাবা-মা হয়েছি। ঘোরের মধ্যেই ঘটে গেছে সব।’

আসিফ তার কাজ আর সংসার জীবন নিয়ে লেখেন, ‘অপমান আর তুচ্ছতাচ্ছিল্যের মগজে কামড় দিয়ে এখনো একই কাঁথার নিচে থাকি। ঝড়ের প্রকারভেদ নিয়ে মাথা ঘামাই না, জোর বাতাসে পাল হাওয়ার পক্ষে মেলে দিয়ে আমরা এখনো একসঙ্গে ভেসে আছি। বেহিসাবি জীবনে আমার নিয়ন্ত্রণ একটা জায়গায় আটকে রেখেছি, সেটা হচ্ছে পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ। চেষ্টা করেছি নিজের মতো, হয়তো ভাই-বোনসহ কাউকেই হ্যাপী রাখতে পারিনি। অন্তর থেকে আন্তরিক ছিলাম সবসময়, বোঝাতে পারিনি। বিশেষ করে শোবিজের পেশাদারকর্মী হিসেবে যেভাবে নিজেকে পরিচালিত করেছি, তাতেও অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন। আমি ক্ষমা চাচ্ছি না কারো কাছে, কারণ আমাকে ভুল বোঝার কারণগুলো নিয়ে নিত্যই ভাবি। সংসার আর কাজ আমার হিসেবে একসুতায় গাঁথা, সক্ষমতাই আসল আনন্দ।’

এই দম্পতির দুই পুত্র সন্তান রয়েছে তারাও যথেষ্ট বড় হয়ে গেছে। আসিফ মনে করেন, তাদের আর শেখানোর কিছু নেই এবং তারাও আসিফকে বোঝাবে সেই ম্যাচিউরটি আসতে দেবেন না তিনি।

তিনি মনে করেন, বাবা-মা সন্তানের মধ্যে বোঝাপড়া হয় না কখনোই। শুধু দায়িত্ববোধ কাজ করে।

সংগীতশিল্পী আসিফ বরাবরই বড় আয়োজন করে তার কাজ গুলো করে থাকেন। নিজের নেয়া সিদ্ধান্তে এক সুতাও ছাড় দেন না। অকপট কথা বলতেও দ্বিধা করেন না তিনি। এসব স্মরণ করে আসিফ লেখেন, ‘সফলতার সঙ্গে উশৃঙ্খলতাও আমার জীবনে এসেছে। বারবার সংযত হয়ে প্রতিবারই নিজের ইচ্ছায় ব্যারিকেড ভেঙেছি। অভ্যাস বদলাতে পারবো না, আমার সরল চলার পথটা মেজাজি হাইওয়েতে গিয়ে মিশেছে। কেউ মানুক আর না মানুক, বেগম ঠিকই মেনে নেয়। নিতেই হবে কারণ আমি এরকমই। ত্রিশ বছরের দাম্পত্য জীবনটা আমার কাছে স্নেহের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কামব্যাক শতরানের মতোই। নিজেকে চিনি রগে রগে, আমি যে খুব ভালো মানুষ সেটা কখনোই দাবি করিনি।’

আসিফের মতে, প্রেম এবং সংসার জীবন কোনো ঘানি টানার বিষয় নয়। এটা জীবনের নিয়মিত একটা রুটিন মাত্র। একমাত্র মৃত্যু ছাড়া এই খেলা শেষ হবার নয়।
তিনি লেখেন, ‘বেগম যতই বুদ্ধিমতি বা স্মার্ট হউক, সিদ্ধান্ত আমার। আমার টেরিটোরিতে আমি স্বৈরাচার, বেগম পছন্দ না করলেও বিরোধিতা করে না। বাকি জীবনও একসঙ্গে কাটাবো ইনশাআল্লাহ, জীবনযুদ্ধে সফল আমরা। ব্যর্থতাগুলো থাকুক সংসদীয় মহিলা আসনের মতো অলংকার হয়ে।’

আসিফ তার স্ত্রী’র সুস্থতা কামনা করে লেখেন, ‘শুধু দোয়া করি সুস্থ থাকো আর আমার উপর নজরদারি চালু রাখো। তোমার মতো ভালবাসাবাসির এক্সপ্রেশন আমার আসে না, তবু ভালোবাসি এটাই সত্য! মৃত্যু ঘুরছে চারপাশে, এটাই হয়তো শেষ বর্ষাবসন্ত উদযাপন আমাদের। ভালো থেকো নিজের মতো। বিয়েবার্ষিকীর শুভেচ্ছা। ভালোবাসা অবিরাম!’

এমন আরো সংবাদ

সর্বশেষ বিনোদন