কদিন আগে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। সেই শোকের ছায়া ঘন থাকতেই এলো আরো একটি দুঃসংবাদ। এবার সন্ধ্যা নেমে এলো বাংলার সংগীত জগতে। শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলার সংগীত জগতের নক্ষত্র সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় স্থানান্তর করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে।
পরবর্তীতে করোনা মুক্ত হন তিনি, শারীরিক অবস্থার উন্নতিও হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আজ অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হওয়ার জেরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সঙ্কটজনক অবস্থায় এই শিল্পীকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আজ সন্ধ্যায় সাতটা ৩০ মিনিটের দিকে মারা যান সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের পদ্মশ্রী পুরস্কার সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। ৯০ বছর বয়সে এ সম্মান পাওয়ার কথা শুনে মর্মাহত হয়েছিলেন ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
‘চন্দন ও পালঙ্কে শুয়ে’, ‘মধু মালতি ডাকে আয়’, ‘আমি তার ছলনায় ভুলবো না’, ‘এ শুধু গানের দিন এ লগন গান শোনাবার’, ‘গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু’, ‘মায়াবতী মেঘে এল তন্দ্রা’, ‘কি বৃষ্টি দেখো মিষ্টি কি বৃষ্টি এ সকাল’, ‘জানি না ফুরোবে কবে এই পথচাওয়া’, ‘আকাশের অস্তরাগে’-এর মতো বহু জনপ্রিয় গানের গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ১৯৭১ সালে ‘জয় জয়ন্তী’ ও ‘নিশিপদ্ম’ সিনেমা গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। ২০১১ সালে রাজ্য সরকার তাকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে আসেনি কোনো পুরস্কার।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর, দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায়। প্রখ্যাত শিল্পী গিরিজাশঙ্কর চক্রবর্তীর শিষ্য ছিলেন তিনি। গুলাম আলি খাঁর কাছ থেকেও গানের তালিম নেন। পঞ্চাশের দশকে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমায় সুচিত্রা সেনের ঠোঁটে সন্ধ্যার অনেক গান ঠাঁই করে নেয়। প্রয়াত গীতিকার শ্যামল গুপ্ত সন্ধ্যার স্বামী।