বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন জগতের বিশিষ্ট নাম মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ‘ব্যাচেলর’, ‘থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘টেলিভিশন’, ‘ডুব’ ও ‘স্যাটারডে আফটারনুন’-এর নির্মাতা এখন আলোচনায় ‘লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান’–এর কারণে। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়েব সিরিজ। এই প্রসঙ্গেই ওপার বাংলার সংবাদমাধ্যম ‘এই সময়’-এর সঙ্গে কথা বলেছেন এই নন্দিত পরিচালক। সেই সাক্ষাৎকারটি আজ (১৮ জুন) ছাপা হয়েছে। সেখানে কবিতা নিয়েও কথা বলেছেন সিনেমার এই কবি। বলেছেন, তিনি নিজেও কবিতা লেখেন—কিন্তু গোপনে।
বললেন, ‘এখনও লিখি (কবিতা) গোপনে। তবে ইদানিং ফেসবুকে দুয়েকটা প্রকাশ করেছি। আসলে আমি তো চিরকাল কবিতাই লিখতে চেয়েছি। কিন্তু লজ্জায় কখনো ছাপতে দিতে পারিনি।’ কবিতা ছাপতে দেননি—কিন্তু ফারুকী কবিতা পুরো বিশ্বকে ঠিকই দেখালেন। তার এক একটি সিনেমা তো কবিতার মতোই। তার সিনেমার দৃশ্য, সংলাপ ও গল্প কাব্যময়। তিনিই বললেন, ‘ভাবলাম কবিতা তো শুধু লেখার বস্তু না। কবিতা আঁকা যায় যেটাকে লোকে পেইন্টিং বলে। কবিতা যন্ত্র দিয়ে বাজানো যায়, ক্যামেরা দিয়ে তোলা যায়, কবিতা যাপন করা যায়।’ তবে ‘ফিল্ম মেকিংয়ের বেসিক’কেও মনে রাখার কথা মনে করিয়ে দিতে ভুলেননি এই নির্মাতা।
কবি জীবনানন্দ দাশ, শামসুর রাহমান, শক্তি চট্টপাধ্যায় ও নির্মলেন্দু গুণ প্রসঙ্গে তিনি রবি ঠাকুরের একটি পংক্তি স্মরণ করলেন, ‘ফুলের বনে যার পাশে যায় তারেই লাগে ভালো’। জানালেন, একেক কবির সৌরভ একেক রকম। তাই কারো সঙ্গে কারো তুলনা হয় না। আরো বললেন, চিত্রশিল্পী শাহাবু্দ্দিনের গতি তার ভীষণ ভালো লাগে। আর তার মতে শিল্পী মনিরুল ইসলাম আসলে রং-তুলি দিয়ে কবিতা আঁকেন। জানালেন, তিনি মনিরুলের ‘অসম্ভব অনুরাগী’।
কবিতা সম্পর্কে আরো বললেন, ‘কবিতা আমি খুব পড়ি।’ তিনি মনে করেন, কবিতার জন্ম যে কোনো মুহূর্তে হতে পারে। প্রেমিক-প্রেমিকা ফোনে কথা বলার সময়ও কবিতার জন্ম হতে পারে।
শেষে ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ ছবিটি নিয়ে কথা বলেছেন ফারুকী। জানালেন সিনেমাটি পোস্ট–প্রোডাকশনে আছে। একটা ভালো সময় দেখে ছবিটি মুক্তি দেয়া হবে। এআর রহমানের সঙ্গে সংগীত নিয়ে কাজ করতে দ্রুত তারা চেন্নাই যাচ্ছেন বলেও নিশ্চিত করলেন। সংগীত পরিচালক রহমান এই সিনেমায় শুধু সংগীতই দেননি—এ সিনেমার অন্যতম প্রযোজকও তিনি। ছবিটিতে অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন বলিউড তারকা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী।
তার অন্য আরেকটি সিনেমা ‘স্যাটারডে আফটারনুন’, যা এখনো বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পায়নি। এ প্রসঙ্গে গত ২৬ মে ফারুকী ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘শনিবার বিকেল ছবিটা ব্যান হয়ে থাকার দুই বছর হয়ে গেল। যারা এই ব্যানের পিছনে আছেন, আল্লাহ আমাদের এই সব মুখ বুজে সহ্য করার তৌফিক দান করুক। যাতে আমাদের কোনো কথা বা কাজে তাদের গোসসা না হয়। আমিন।’