কেন ভেঙেছিল দিলীপ কুমার-মধু বালার প্রেম

মধুবালা ও দিলীপ কুমার

বলিউড ইতিহাস ধরে অপরূপ সুন্দরী অভিনেত্রীদের তালিকা করলে যে কজনের নাম সামনের সারিতে থাকে, তাদেরই একজন মধুবালা। অভিনয় প্রতিভা ও রূপের যাদুতে যিনি মাতিয়ে রেখেছিলেন গোটা বোম্বে সিনেপাড়া। হিন্দি চলচ্চিত্রের ‘আনারকলি’ স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে যশ ও খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করলেও, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ততোটা সুখী ছিলেন না। তার সফল চলচ্চিত্র জীবন, ব্যর্থ প্রেম আর অকাল মৃত্যুর ঘটনা ট্র্যাজিক সিনেমার গল্পকেও হার মানায়।

ছোটবেলায় এক দরবেশ নাকি মধুবালাকে দেখে বলেছিলেন ‘এই মেয়ে অনেক খ্যাতি লাভ করবে, কিন্তু সুখী হতে পারবে না!’ সেই দরবেশের কথাি হয়তো সত্যি হয়েছিল।
মধুবালার জীবনের সব থেকে বড় ট্রাজেডি দিলীপ কুমারের সঙ্গে প্রেম। ‘মুঘল-ই-আজম’-এর সেই রোমান্টিক জুটি তখন পর্দা ছাড়িয়ে বাস্তবেও সমান জনপ্রিয়। শুধু চলচ্চিত্রেই নয়, বাস্তবেও ‘সেলিমের’ প্রেমে পড়েন ‘আনারকলি’। তাদের প্রেম দীর্ঘ সাত বছর চলেছিল বলে শোনা যায়।

তবে এই সম্পর্ক আকস্মিক ভেঙে যায় তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সূত্রে জানা যায়, একটি ছবির শুটিং চলাকালে মধুবালাকে বাইরে যেতে দিতে রাজি ছিলেন না তার বাবা আতাউল্লাহ খান। তাই দিলীপ কুমারকে বিষয়টি সমাধানে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন সেই সিনেমার পরিচালক-প্রযোজকেরা। দিলীপ কুমার এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে মধুবালার বাবা তাকে অপমান করেন।

‘মুঘল-ই-আজম’- দিলীপ কুমার ও মধুবালা

কিন্তু মধুবালার বক্তব্য ছিল, দিলীপ কুমার অপমানিত হননি, বরং তার বাবা আতাউল্লাহ খানকে অপমান করেছেন প্রেমিক দিলীপ। পরে মধুবালা দিলীপ কুমারকে অনুরোধ জানান, তার বাবার কাছে এই আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে। কিন্তু আতাউল্লাহ খানের কাছে ক্ষমা চাননি তিনি। এই সামান্য ঘটনায় ভেঙে যায় দিলীপ কুমার-মধুবালার দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক।

প্রেমের বিচ্ছেদ ঘটার পর অনেকটা দুঃখ, কষ্ট ও ক্ষোভ নিয়ে ১৯৬০ সালে মধুবালা বিয়ে করেন কিশোর কুমারকে। অন্যদিকে দিলীপকুমার ১৯৬৬ সালে সায়রা বানুকে বিয়ে করেন।
জানা যায়, জন্মগতভাবে মধুবালার হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র ছিল। তিনি আগে থেকেই নিজের এ অসুখ সম্পর্কে জানতেন। পরবর্তীতে এটি বড় আকার ধারণ করে। অসুখের কথা জানার পর মধুবালাকে লন্ডনে নিয়ে যান কিশোর কুমার।

কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, মধুবালা সর্বোচ্চ দু-এক বছর বাঁচবেন। যদিও বেঁচেছিরেন আরো নয়টি বছর। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ইহজগৎ ছেড়ে পরজগতে পাড়ি জমান রুপালি পর্দার এই অনন্য সুন্দরী অভিনেত্রী। ক্ষণজন্মা এই অভিনেত্রী আজো অম্লান তার অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্য দিয়ে।

এমন আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ বিনোদন