‘পুরুষ তো শেষ পর্যন্ত পুরুষই’, নুসরাত প্রসঙ্গে তসলিমা

টালি অভিনেত্রী নুসরাত জাহানের মা হওয়ার খবর নিয়ে তোলপাড় ভারতীয় মিডিয়া। তবে এ বিষয়ে অন্য তারকাদের কারো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তা না হোক- তসলিমা নাসরিনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে আর কি চাই! হ্যাঁ, নুসরাতকে নিয়ে কথা বলেছেন নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে প্রতিবাদের মুখে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হন তসলিমা। তিনি সুইডেনের পাসপোর্টধারী হিসেবে ভারতে বসবাস করছেন। বিতর্কের মধ্যে থাকেন এই লেখক। কিছুদিন আগেই ইংল্যান্ডের মুসলিম ক্রিকেটার মঈন আলীকে ‘জঙ্গি’ ইঙ্গিত করে তার টুইট আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্ক তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এবার নুসরাতকে উদ্দেশ্য করে গত ৫ জুন তসলিমা নাসরিন নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে লিখলেন। সন্তানের জনক প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নুসরাত ও নিখিলের বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া উচিত বলে ইঙ্গিত করেন তিনি। জাতি-ধর্ম ভুলে আত্মীয়তা গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন তসলিমা। নুসরাতকে তিনি অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে তুলনা করেছেন এবং বলেছেন, নুসরাতের অভিনয় চমৎকার। লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো,

“নুসরতের খবর বেশ চোখে পড়ছে। তিনি প্রেগনেন্ট। তাঁর স্বামী নিখিল এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। দুজন আলাদা থাকছেন ছ’মাস হলো। তবে যশ নামে এক অভিনেতার সঙ্গে অভিনেত্রী নুসরত প্রেম করছেন। সন্তানের পিতা, মানুষ অনুমান করছে, যশ; নিখিল নয়। খবরটি খবর না গুজব জানিনা। তবে এই যদি পরিস্থিতি হয়, তবে নিখিল আর নুসরতের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াই কি ভালো নয়? অচল কোনও সম্পর্ক বাদুড়ের মতো ঝুলিয়ে রাখার কোনও মানে হয় না। এতে দু’পক্ষেরই অস্বস্তি।

যখন নুসরত আর নিখিল বিয়ে করলেন, বেশ আনন্দ পেয়েছিলাম। ঠিক যেমন আনন্দ পেয়েছিলাম সৃজিত আর মিথিলা যখন বিয়ে করেছিলেন। অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি বলে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে বিয়ে হলে খুব স্বাভাবিক কারণেই পুলকিত হই। জাত ধর্ম ইত্যাদি দূর করতে হলে ভিন্ন জাত আর ভিন্ন ধর্মের মানুষকে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এতেই হিংসে আর হানাহানিকে হটানো যাবে। কিন্তু এত চোখ জুড়োনো জুটি যে বেশিদিন সুখে থাকবে না কে জানতো!
সেদিন ব্রাত্যর একটি ছবিতে নুসরতকে দেখলাম। ওটিই নুসরতের প্রথম কোনো ছবি আমার দেখা। মেয়েটি অনেকটা অ্যাঞ্জেলিনা জোলির মতো দেখতে, অভিনয়ও করে বেশ চমৎকার। নিশ্চয়ই মেয়েটি স্বনির্ভর। আসলে স্বনির্ভর এবং সচেতন হলে, আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মান যথেষ্ট থাকলে নিজের সন্তানের অভিভাবক নিজেই হওয়া যায়। নিজের সন্তানকে নিজের পরিচয়েই বড় করা যায়। পুরুষের মুখাপেক্ষী হতে হয় না। আসলে নিখিল এবং যশের মধ্যে কি এমন আর পার্থক্য! পুরুষ তো শেষ পর্যন্ত পুরুষই। এক জনকে ত্যাগ করে আরেক জনকে বিয়ে করলে খুব যে সুখময় হয়ে ওঠে জীবন তা তো নয়। দ্বিতীয় বিষময় জীবন থেকে বাঁচতে তাহলে কি আবার আরেকটি বিয়ে করতে হবে? তাহলে এ রেসের শেষ হবে না, কাঙ্ক্ষিত পুরুষের দেখাও মিলবে না। স্বাধীনচেতা নারীর কাঙ্ক্ষিত পুরুষ কল্পনায় থাকে, বাস্তবে নয়।”

কোভিড থেকে সেরে ওঠা লেখক তসলিমার লেখা প্রসঙ্গে নুসরাতের কি প্রতিক্রিয়া তা এখনো জানা যায়নি।

এমন আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ বিনোদন